৫ জানুয়ারি, একটি দিন না অন্য কিছু?
ইতিহাসের পাতায় পাতায় ৫ জানুয়ারি ।
ঘটনাবলী
- ১৫০০ - ডিউক লুদভিক সোফারজ মিলান জয় করেন।
- ১৫৫৪ - নেদারল্যান্ডের আইন্দহোভেনে ভয়াবহ অগ্নিকার্ড সংগঠিত।
- ১৭৫৯ - আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন মার্থা কসটিসকে বিবাহ করেন।
- ১৭৮১ - আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ: ভার্জনীয়ার রিচমন্ড বন্দর ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন বেনডিক্ট আরন্ল্ডের নেতৃত্বে জ্বালীয়ে দেয় ব্রিটিশ নৌ-বাহিনী।
- ১৭৮২ - আমেরিকার গৃহযুদ্ধ: ফ্রান্সের সেনাবাহিনী কর্তৃক ব্রিটিশ সেনানিবাস ব্রিমস্টনের সেন্ট কিটস অবরোধ।
- ১৮৫৪ - সান ফ্রান্সিসকোতে স্টিমারে বিস্ফোরন। ৩০০ মানুষ নিহত।
- ১৮৯৬ - অস্ট্রিয়ান সংবাদ পত্র সংবাদ প্রকাশ করে উইলিয়াম রনজেনের আবিস্কৃত নতুন ধরনের রশ্মী নিয়ে যা পরে এক্স-রে হিসাবে পরিচিত হয়।
- ১৯০০ - আইরিশ নেতা জন রেডমন্ড ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে।
- ১৯০৯ - কলম্বিয়া পানামাকে স্বাধীন ঘোষণা করে।
- ১৯১৮ - জার্মান ওয়ার্কার পিস গঠিত হয় যা পরে নাৎসি পার্টি হিসাবে পরিচিত হয়।
- ১৯৭১ - প্রথম ওয়ানডে ক্রিকেট ম্যাচ মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত। এতে অংশ গ্রহণ করে অস্ট্রোলিয়া ও ইংল্যান্ড।
- ১৯৯৬ - ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের যোদ্ধা হামাস কর্মী ইয়াহিয়া আয়াস ইযরাঈলী বোমা হামলায় নিহত।
জন্ম
- ১৫৯২ - মোঘল সম্রাট শাহ-জাহান।
- ১৯২৮ - পাকিস্থানি প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টু।
- ১৯৪৮ - ওয়ালি ফোরম্যান, অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়া আইকন
- ১৯৪৮ - টেড ল্যাঙ্গে, আমেরিকান অভিনেতা ও পরিচালক
- ১৯৬৯ - আমেরিকান গায়ক মার্লীন ম্যানসন।
মৃত্যু
- ১৯৩৩ - ক্যালভিন কুলিজ্, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩০তম রাষ্ট্রপতি।
বাংলাদেশ এবং ৫ জানুয়ারি
বিশেষ নিবন্ধণঃ
Logo of B.N.P & B.A.L |
- আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী : ৫ জানুয়ারি ২০১৪-তে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচনকে ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক আর কথাবার্তার শেষ নেই। প্রথম দিন থেকে অদ্যাবধি এ কথকতা চলে আসছে। অথচ এই নির্বাচনের অনিবার্যতা নিয়ে কথা খুবই কম। আমরা মনে করি রাজনীতি অঙ্গনের গতিশীলতার স্বার্থেই ৫ জানুয়ারির (২০১৪) নির্বাচনের একটি চুলচেরা বিশ্লেষণ দরকার। কেননা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিকতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ৫ জানুয়ারির (২০১৪) নির্বাচনের গুরুত্ব অনুধাবন করা খুবই দরকার।
৫টি কারণে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অপরিহার্য এবং আবশ্যক ছিল। প্রথমত; সংবিধানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা, দ্বিতীয়ত; গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা, তৃতীয়ত; রাজনীতিতে সহিংসতাকে জায়গা না দেওয়া, চতুর্থত; রাষ্ট্রের কর্মকা-কে নৈরাজ্যের পথে ঠেলে না দেওয়া এবং পঞ্চমত; সুশীল (সিভিল) শাসনকে মজবুত ভিত্তি প্রদান। অনেকে মনে করেন, উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতেও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন আবশ্যক ছিল।
নির্বাচনে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিঃসন্দেহে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ শর্ত। পাশাপাশি এ কথাও সত্য যে, কাউকে বাধ্য করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানো যায় না। ৫ জানুয়ারির (২০১৪) নির্বাচনের পরিস্থিতিটা এমনই ছিল। অনেকগুলো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল যেমন এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, অনেকে আবার নিজেদের গণতান্ত্রিক দল বলে দাবি করলেও নির্বাচনে অংশ নেননি। এ কারণে নির্বাচনী আবহাওয়াটা অনেকটাই মেঘলা ছিল। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন নি তারা, বিশেষত বিএনপি ও জামাতে ইসলামী নির্বাচন শুধু বয়কট করেনি, তারা নির্বাচনকে ভ-ুল করতেও সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়েছিল। এ প্রয়াসের অংশ হিসেবে তারা ধ্বংসাত্মক ও সহিংস পথ বেছে নেয়। হরতাল, অবরোধ আর বয়কটের নামে গাছ কেটে রাজপথ বন্ধ করে দেওয়া, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা, এমনকি, যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের হত্যার পথ বেছে নিতেও দ্বিধা করেনি। দ্বিধা করেনি আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ, বিজিবি, সেনাসদস্য আর প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক কর্মীদেরও হত্যা করতে পিছপা হননি। মোদ্দা কথায় সরকার ও রাষ্ট্রযন্ত্রকে অচল করে দিয়ে তারা চেয়েছিলেন বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ন্যায় একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে। ৫ জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে তাদের সেই চক্রান্ত আর ষড়যন্ত্রকেই ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রশ্ন থেকে যায়, এ নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ কেমন ছিল? যেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে, সেসব আসনে জনগণের অংশগ্রহণ স্বতঃস্ফূর্ত ছিল এবং নির্বাচন কমিশনের হিসাবমতে, ৪২ শতাংশের বেশি অংশগ্রহণ ছিল ওই নির্বাচনে (যদিও আমার নির্বাচনী আসনে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৬৭ শতাংশ)। যেসব আসনে একক প্রার্থীগণ বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে এসেছেন সেসব আসনের হিসাব আমাদের জানা না থাকলেও আমরা ধরে নিতে পারি, সেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বা ভোটার উপস্থিতি প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ হতে পারত। সুতরাং, যারা প্রশ্ন তোলেন যে, ভোটকেন্দ্রে জনগণের উপস্থিতি ছিল না তারা সঠিক হিসাব নিয়ে কথা বলছেন না। জনগণের অংশগ্রহণ ব্যতীত বা ভোটার উপস্থিতি ছাড়া নির্বাচন হলে তো ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান সাহেবের ‘হ্যাঁ’ ‘না’ ভোটের মতো বা বিএনপির ১৯৯৬-এর ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মতো বা ১৯৮৮ সালে এরশাদ সাহেবের নির্বাচনের মতো নির্বাচনের ব্যবস্থা হতো বা ফলাফল হতো, যেসব নির্বাচনে জন অংশগ্রহণ না থাকা সত্ত্বেও ৯৯ শতাংশ ভোট পড়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। বিশাল আকারের ধ্বংসযজ্ঞের প্রয়াস সত্ত্বেও ৫ জানুয়ারি ২০১৪-এর নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল পূর্ববর্তী অনেক নির্বাচনের চেয়ে অধিক। ভয়ভীতি উপেক্ষা করেই মানুষ ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছে। এতকিছুর পরও দলগুলোর অংশগ্রহণ নিয়ে কথা আসে। আমরা এ বিষয়ে স্পষ্ট করতে চাই যে, দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে কেউ বাধা দেয়নি। তারা তো স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে নিয়মিতই অংশগ্রহণ করেছেন এবং ফলাফলও ভালো করেছেন। তা হলে তারা জাতীয় নির্বাচনে কেন অংশ নিলেন না? আমরা তাদের ইচ্ছার সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারি। আমরা মনে করি, তারা সেদিন নির্বাচনে অংশ নেয়নি এ জন্য যে, তারা নির্বাচনী পথে নয়, সহিংসতা ও অন্ধকারের পথে ক্ষমতার পালাবদল চেয়েছিল। তারা চেয়েছিল অন্ধকারের শক্তিকে ক্ষমতায় এনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দিতে, দুর্নীতির অভিযোগে বিচারাধীন মামলাগুলো তুলে নিয়ে সাধু সাজতে। পুনরায় লুণ্ঠন আর সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চেয়েছিল তারা। তাদের এই সকল ষড়যন্ত্রই ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছিল ৫ জানুয়ারির (২০১৪) নির্বাচনে। সংবিধানের প্রতি অনুগত রাষ্ট্র ও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রতি দৃঢ় আস্থা পোষণকারী সরকার ও জনগণ সেদিন যে সাফল্য বয়ে এনেছিল তা সকল বিচারেই ঐতিহাসিক। তাই, আমরা মনে করি ৫ জানুয়ারির (২০১৪) নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের ক্ষমতায়ন মজবুত ভিত্তি পেয়েছে এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ধারাবাহিকতার ধারাকে সমুন্নত রাখতে পেরেছে। গণতন্ত্রায়ন ও উন্নয়নের প্রশ্নে, জনগণের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণভিত্তি দৃঢ় করার প্রশ্নে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। ইতিহাসের পাতায় এই নির্বাচনের গুরুত্ব ও অনিবার্যতা এবং ইতিবাচকতা লাল অক্ষরে লেখা থাকবে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন মানেই জনতার বিজয়।
লেখক : সংসদ সদস্য ও সদস্য, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ - আগামীকাল ৫ জানুয়ারি : গণতন্ত্রের বিজয় দিবস- বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ
৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস - বাংলাদেশ জাতিয়তাবাদী
দল ( বি.এন.পি.)
৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের হত্যা দিবস নয়, বিজয় দিবস?
শেখর দত্ত : বিএনপি-জামায়াতের ২০ দলীয় জোট কোন কোন যুক্তিতে ৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে, তা বিবেচনায় নিলে দেখা যাবে মূলত তিন যুক্তিতে ওই জোট দিবসটি এই নামে চিত্রিত করতে চাইছে। প্রথমত, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। পরবর্তী নির্বাচনগুলোও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয়ত, নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের ২০ দলীয় জোট ছাড়াও সিপিবি-বাসদ জোট, গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ প্রভৃতি দল অংশ নেয়নি। ১৫৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। তৃতীয়ত, বর্তমানে জেল-মামলা দিয়ে দমনমূলক নীতি কার্যকর করা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের এই যুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিরপেক্ষ দাবিদার সুশীল সমাজের ‘অতি গণতন্ত্রী’ অংশ বলতে চাইছে যে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ বলেছিল যে, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নির্বাচন করতে হচ্ছে। দ্রুতই আর একটি নির্বাচন করা হবে। এই কথার বরখেলাপ হচ্ছে, তাই দেশে গণতন্ত্র নেই।
উল্লিখিত যুক্তিগুলো নিয়ে আলোচনা করলেই এটা সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, ৫ জানুয়ারি বাস্তবে গণতন্ত্রের হত্যা দিবস কি না? এটা কার না জানা যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়েছিল বিএনপির মাগুরা মার্কা উপনির্বাচনের ফলে। যদিও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু নেই। নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো সরকার ক্ষমতায় থাকা গণতন্ত্রের মৌল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিধায় ওই ব্যবস্থা কোনো গণতান্ত্রিক দেশেই গৃহীত হয়নি। বিএনপির কারণেই জাতি ওই ব্যবস্থায় যেতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু ঘটনাপ্রবাহে বিএনপির কারণেই ওই ব্যবস্থা ভ্রান্ত ও চরমতমভাবে ক্ষতিকর প্রতিপন্ন হয়েছে। আর কেবল সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে নয়, জনগণ কর্তৃকও প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
একটু খেয়াল করলেই এটা স্মরণে আসবে যে, ১৯৯৬ সালে একদলীয় নির্বাচন করে বিএনপি যখন বাধ্য হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তাড়াহুড়া করে সংসদে পাস করে এবং দুই দিনের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দালাল রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস তাতে সম্মতি স্বাক্ষর করে দেন; তখন ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত কার্যকর করে পুনরায় ক্ষমতায় আসার উদ্দেশ্যে বিএনপি ওই ব্যবস্থায় বেশ কতক ফাঁক রেখে দেয়। ক্ষুদ্র এ কলামে ফাঁক নিয়ে বিস্তৃত আলোচনায় না গিয়ে উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির কাছে রাখা। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিবাদও করেছিল। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই খালেদা জিয়া সরকার পদত্যাগ করায় জাতি নির্বাচনে যায়। কিন্তু বিএনপি ফাঁক দিয়ে ঢুকে যে ফাল হয়ে বের হতে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করেছিল, তা রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস কর্তৃক সেনাপ্রধান জেনারেল নাসিমকে বাধ্যতামূলক অবসব গ্রহণ করানোর ঘটনার ভেতর দিয়েই প্রমাণিত হয়। ওই যাত্রায় জনগণের ভোট তথা গণতন্ত্র বেঁচে যায় জনগণ সজাগ থাকার ফলে এবং সর্বোপরি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার জন্য।
১৯৯৬ সালে নির্বাচনে বিজয়ের পর গণতন্ত্র ও সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যই আওয়ামী লীগ ওই ফাঁক বিবেচনায় নিয়েও গণতন্ত্র তথা নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অবাধ হওয়ার স্বার্থে নিরপেক্ষ বলে সুপরিচিত বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে। কিন্তু পরাজয়ের পর বিএনপি জামায়াতকে স্থায়ী পার্টনার করে নেয় এবং ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শুরু করে পরবর্তী নির্বাচনে বিজয় লাভের লক্ষ্য নিয়ে। যার পরিণতি হলো শা-ল-সা সরকার। ওই সরকার বিএনপি-জামায়াত জোটকে যে ভোট ডাকাতির ভেতর দিয়ে ক্ষমতায় এনেছিল, তা আজ দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট। ক্ষমতায় বসে ওই জোট পরবর্তী ২০০৬ সালের নির্বাচনে জেতার জন্য যে নীলনকশা প্রণয়ন করে, তা টু ইন ওয়ান রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনের ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়রিং’ নামে সুপরিচিত। ওটা করার জন্য বিচারপতিদের বয়স বাড়ানো, নির্বাচন কমিশনকে আজিজ-জাকারিয়া-জকরিয়া মার্কা করা থেকে শুরু করে এ হেন অপকর্ম নেই যে তা করা হয় না। এতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় শেষ পেরেকটি ঠুকে দেয়া হয়। যার পরিণতিতে দেশে আবারো আসে শক্তির জোরে জরুরি আইনের ১/১১-এর আর্মি ও নিরপেক্ষ দাবিদার সুশীল সমাজ ব্যাকড ফকরুদ্দিন-মঈনউদ্দিনের সরকার।
ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে প্রত্যাখ্যান করার মতো পর্যাপ্ত উপাদান জোগায়। নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে দিয়ে ‘কিংস পার্টি’ গড়ার প্রচেষ্টা এবং মাইনাস টু কার্যকর করতে যাওয়ার ভেতর দিয়ে উল্লিখিত বিষয়ের সত্যতা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। ক্ষুদ্র এ কলামে কতক বিষয় উল্লেখ করলেই বুঝা যাবে, কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাস্তব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ফেল প্রমাণিত হয়েছে। প্রথমত, সংবিধানের মৌল নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং নিজ অভিজ্ঞতা থেকে বিচারপতি হাবিবুব রহমান কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে অবস্থান নেননি। দ্বিতীয়ত, বিচারপতিদের বয়স বাড়িয়ে বিচার ব্যবস্থাকে এবং প্রশাসনকে দলীয়করণ করে বিএনপি-জামায়াত জোট এই ব্যবস্থাকে সর্বনাশের মধ্যে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। তৃতীয়ত, এই ব্যবস্থা ভ্রান্ত ও ব্যর্থ হওয়ার কারণেই দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই ব্যবস্থায় আদালতকে না জড়ানো এবং কার্যকর না রাখার পক্ষে সুস্পষ্ট রায় দিয়েছে। চতুর্থত, খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তুলে নির্বাচন বয়কট করলেও কোনো রূপরেখা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। একবার তিনি রূপরেখা দিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু বিতর্কিত হয়ে বিপাকে পড়ে তা প্রত্যাহার করে নেন। দাবি তুলে যদি কেউ বলেন, অপরে দিক রূপরেখা, তবে তা কি কখনো যথাযথ ও গ্রহণযোগ্য হয়!
সর্বোপরি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি সরকার পরিচালনা ব্যবস্থাকে বন্ধ্যত্ব ও নো রিটার্নের দিকে জাতিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে। প্রতিবারের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিলেই দেখা যাবে যে, সরকারপ্রধান কে হবেন কিংবা উপদেষ্টা কারা হবেন, তা নিয়ে গোল বাধে। যদি বড় কোনো দল অনঢ় অবস্থান নিয়ে কাউকেই না মানেন তবে কি অচলতা সৃষ্টি হতে পারে তা কি কল্পনা করা চলে। অতি মাত্রায় গণতন্ত্র করতে গিয়ে তখন গণতন্ত্রই টিকে না থাকার অবস্থা দাঁড়াবে। উল্লিখিত সব কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা টিকে থাকার যোগ্যতা হারালেও সংবিধান সংশোধন না করে ওই ব্যবস্থাকে বাতিল করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু জাতির সৌভাগ্য হচ্ছে এই যে, সংবিধানের ভিত্তিতে সংসদে নিরঙ্কুশ সমর্থনের ভিত্তিতেই এই ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। প্রশ্ন হলো- বিএনপি-জামায়াত জোট তখন বিতর্কে অংশ না নিয়ে সংসদ বয়কট করেছিল কেন? বিএনপিকে সংবিধান সংশোধনের জন্য কমিটিতে রাখলেও তারা তা বয়কট করতে গিয়েছিল কেন? দাবির পক্ষে যুক্তি দিতে পারবে না এবং পরবর্তী নির্বাচন ভণ্ডুল করার জন্যই যে তা করেছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিএনপি-জামায়াত জোটসহ কতক দল সংবিধানের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন বয়কট করলে গণতন্ত্র হত্যা হয়ে যাবে, এমনটা কোনো যুক্তিতেই প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। নির্বাচন করা কিংবা না করা কোনো দলের নীতি-কৌশলের বিষয়। সত্তরের নির্বাচন ভাসানী ন্যাপ বয়কট করেছিল, ওই দলের মধ্যে থাকা চীনপন্থী কমিউনিস্ট গ্রুপগুলো স্লোগান তুলেছিল, ‘তোরা কর নির্বাচন, আমরা যাই সুন্দরবন’; তাতে কি নির্বাচন বাতিল হয়েছে! জিয়া সামরিক ফরমানে সামরিক শাসনের মধ্যে সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচন দিয়েছিলেন এবং ওই সংবিধানের ভিত্তিতে নির্বাচন হয়েছিল; তাতে কি নির্বাচন বাতিল হয়েছে! আর নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচনার প্রস্তাব দিলে তৎকালীন বিরোধী দলীয় জোট নেত্রী খালেদা জিয়া তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কেন? কেন প্রধানমন্ত্রী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব দিলেও বিএনপি নেত্রী তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন?
এসব দিক বিবেচনায় নিলে বুঝা যাবে, নির্বাচন বয়কট করার কৌশল বিএনপি-জামায়াতের ২০ দলীয় জোট নেয় সুচিন্তিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই। আর এ লক্ষ্য থেকেই ২০১৩ সালের শেষ দিক থেকে আন্দোলনের নামে অরাজকতা-অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার জন্য মাঠে নেমেছিল। নতুবা সংসদ অবিরাম সংসদ বয়কট করেছিল কেন? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণে এটা প্রমাণিত হয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ এবং অবৈধ শক্তির ক্ষমতায় আসার পথ পরিষ্কার করতেই ওই জোট গৃহযুদ্ধ বাধাতে তৎপর হয়েছিল। তদুপরি ‘হাওয়া ভবন’ নিয়ন্ত্রিত দুষ্কর্ম জনগণের মনে স্থায়ী আসন গেড়ে রেখেছে বিধায়ও নির্বাচন বয়কট করে অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আনতে চেয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট। প্রসঙ্গত একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তানও কিন্তু পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধ চাইছিল। এটাই তো বাস্তব সত্য যে, গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে ৫ জানুয়ারির ভোটকে তথা গণতন্ত্রকে বিএনপি-জামায়াত জোট বানচাল করতে চেয়েছিল আর সংবিধানিক ধারা রক্ষা করতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট নির্বাচন করেছিল। এখন বিচার করুন, গণতন্ত্র হত্যা করল কে আর গণতন্ত্র রক্ষা করল কে? উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে পিণ্ডির দালালরা চেষ্টা করবে না তো কে করবে!
প্রকৃত বিচারে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সংবিধান ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছে। জনগণ অন্ধ কিংবা বোকা নয়। সেই পাকিস্তানি আমল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক দলগুলোর গণতন্ত্র ও জাতিবিরোধী রাজনীতির নীতি কৌশল দেখতে দেখতে পোড় খেয়ে দেশবাসী এখন যথেষ্ট সচেতন। আর সেই কারণেই বিএনপি-জামায়াতের ২০ দলীয় জোটের তথাকথিত ও জাতিবিরোধী হীন উদ্দেশ্য প্রণোদিত আন্দোলনে রাস্তায় নামা দূরে থাকুক, ন্যূনতম সমর্থনও দেয়নি। বিদ্যমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে ভারসাম্য বজায় রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে উন্নয়নের ধারায় শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে দেশ চলুক চেয়েছে। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের ভেতর দিয়ে পরবর্তী পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের অংশগ্রহণ এবং পরাজয় প্রমাণ করে জনগণ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে গণতন্ত্রের বিজয় হিসেবেই মনে করছে। আর বিদেশি যারা গণতন্ত্র গেল গেল বলে নানা দৌড়ঝাঁপ করেছিল, তারাও সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক ধারায় প্রতিষ্ঠিত সরকারকেই বিএনপি-জামায়াতের দাবির মুখে ছাই দিয়ে মেনে নিয়েছে।
আর পেট্রলবোমা দিয়ে যারা নিরীহ মানুষ ও পুলিশ মেরেছে, আগুন দিয়ে সব পুড়িয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেতে চেয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চেয়েছে; তাদের আইনের আওতায় আনাটাই তো গণতন্ত্র ও সংবিধানসম্মত। জনগণ চায় আইন তার নিজস্ব গতিতে চলুক।
[লেখাটি একই শিরোনামের পূর্বলিখিত একটি দীর্ঘ কলামের অংশবিশেষ]
শেখর দত্ত : রাজনীতিক, কলাম লেখক।
৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ বনাম ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস!!!
রাজপথে সরকারি দল ছাড়া আর কেউ নেই। এই হাহুতাশের মধ্যেই বছর শেষের এক দিন আগে আবারো মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। বিগত একটি বছর কোনো ধরনের আন্দোলন জমাতে পারেনি দলটি। তাই এখন অনেকেই বিএনপিকে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘরে বন্দি সংবাদ সম্মেলন-নির্ভর দল বিবেচনা করছেন।
অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবীরা দলটিকে জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে আন্দোলন গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়ে আসছেন। কিন্তু বিএনপির নীতিনির্ধারকরা ওদিকে না তাকিয়ে আবারো ইস্যু হিসেবে সামানে এনেছে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে। এ দিনটিকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে আখ্যায়িত করে ঢাকার বাইরে সারাদেশে কালো পতাকা মিছিল এবং ৭ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দিনটিকে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়ে ৫ জানুয়ারি ঢাকার দুই জায়গায় সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। সেইসঙ্গে দলের একাধিক নেতা বলেছেন, ওইদিন বিএনপিকে জনগণ পথে নামতে দেবে না। অন্যদিকে এদিন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ আদালতে হাজিরা দেয়ার কথা রয়েছে। আদালতে গেলে আদালত চত্বর এবং এর আশপাশে ব্যাপক শোডাউনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। ফলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে নতুন করে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে।
দিনটিকে সামনে রেখে গত শুক্রবার এক সভায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, দশম সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে জনগণ বিএনপিকে রাজপথে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেবে না।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি ও তার শরিকরা। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে (২০১৫) বিএনপি গণতন্ত্র ‘হত্যা দিবস’ এবং আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের ‘বিজয় দিবস’ পালনের ঘোষণা দিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিলে তৈরি হয় উত্তেজনা। পুলিশ ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সমাবেশের পথ বন্ধ করে দিলে খালেদা টানা অবরোধের ঘোষণা দেন। এরপর তিন মাসে নজিরবিহীন সহিংসতা ও নাশকতায় দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়, যার পেছনে বিএনপিকেই দায়ী করে আসছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
দশম সংসদের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে চলতি বছর ৫ জানুয়ারি নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। আর আওয়ামী লীগ কর্মসূচি পালন করেছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে। নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি এগিয়ে আসায় গত ২৮ ডিসেম্বর কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আগামী ৫ জানুয়ারি কালো পতাকা মিছিল করবে তার দল। আর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ জানুয়ারি হবে সমাবেশ।
গত শুক্রবার ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের এক যৌথসভায় বিএনপির ওই কর্মসূচি নিয়ে কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা হানিফ। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পলন করবে, আর বাংলার মানুষ বসে থাকবে না। বাংলার জনগণ এটা মেনে নেবে না।
বিএনপি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নিয়ে ‘ভুল করেছে’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ওই দিন যদি গণতন্ত্রের হত্যা চেষ্টা হয়ে থাকে, তবে সেটা করেছে বিএনপি। কারণ ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তারা মানুষকে শান্তিতে ভোট দিতে দেয়নি। ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে।... আমরা গণতন্ত্র রক্ষা করেছি আর বিএনপি জ্বালাও-পোড়াওয়ের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আন্দোলন না করে বিএনপিকে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, নির্বাচন বয়কট করা কোনো ‘রাজনৈতিক সমাধান নয়’।
এদিকে ৫ জানুয়ারির পাশাপাশি ৭ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ইতিমধ্যে দলের পক্ষ থেকে সমাবেশের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। বিএনপির নেতারা আশা করছেন, দলের এই কর্মসূচি পালনে সরকার কোনো বাধার সৃষ্টি করবে না। শেষ পর্যন্ত তারা সমাবেশের অনুমতি পাবেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলের পক্ষ থেকে ৫ জানুয়ারি সারাদেশের জেলা-উপজেলায় কালো পতাকা মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। যে কোনো মূল্যে তা হবেই। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ জানুয়ারি সমাবেশও হবে। ইতিমধ্যে আমরা সমাবেশের অনুমতি চেয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। আশা করি, তারা আমাদের অনুমতি দেবে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলের পক্ষ থেকে ৫ জানুয়ারি সারাদেশের জেলা-উপজেলায় কালো পতাকা মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। যে কোনো মূল্যে তা হবেই। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ জানুয়ারি সমাবেশও হবে। ইতিমধ্যে আমরা সমাবেশের অনুমতি চেয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। আশা করি, তারা আমাদের অনুমতি দেবে।’
এছাড়া শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে মূলত নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং পরে সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিকে টার্গেট করেই মাঠে নামতে চায় বিএনপি। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠনে জনমত তৈরির পাশাপাশি সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করাই হচ্ছে দলটির বর্তমান লক্ষ্য।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৭ জানুয়ারির সমাবেশ থেকে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাব যে নির্বাচনে দেশের সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ থাকবে। পাশাপাশি এই দাবির পক্ষে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্যও আহ্বান জানানো হবে। তিনি বলেন, আমরা অতীতের মতো এবারো শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। প্রত্যাশা করি সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং সমাবেশের জন্য অনুমতি দেবে।
এছাড়া ৫ জানুয়ারি বিএনপিকে রাজপথে নামতে দেয়া হবে না- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের দেয়া এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘তিনি (হানিফ) সরাসরি বিএনপিকে হুঁমকি দিয়েছেন। এই হুঁমকি আমরা দিলে এতদিনে ১০টি মামলা হয়ে যেত।’
চৌদ্দ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন ছিল বিএনপির শ্রেষ্ঠ সিদ্ধান্ত- এ মন্তব্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধকে উপহাস করা হয়েছে, যা আমাদের প্রতারক জাতিতে পরিণত করেছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে বড় ধরনের জমায়েত করার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। ঢাকার বাইরেও ঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। তবে সংঘাত এড়িয়ে কর্মসূচি পালনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি ও তার শরিকরা। ফলে নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
আজ বিএনপির 'গণতন্ত্র হত্যা দিবস'
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৪র্থবর্ষ পূর্তির দিনটিকে আজ 'গণতন্ত্র হত্যা দিবস' হিসেবে পালন করবে বিএনপি।
ঢাকা ছাড়া দেশজুড়ে দলটি আজ কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালন করবে। এ ছাড়া সব বড় শহর ও জেলা সদরে কালো পতাকা মিছিল করার কর্মসূচিও রয়েছে। আর ৭ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সভা করার অনুমতি পায়নি দলটি। অন্যদিকে, দুর্নীতি মামলায় আজ দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ থাকায় ঢাকায় কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি। এদিকে দিনটিকে আজ 'গণতন্ত্রের বিজয় দিবস' হিসেবে পালন করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ঢাকাসহ দেশজুড়ে আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করায় কিছুটা উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ।
দিবসটি উপলক্ষে গত বছরের ৫ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চাইলেও এবার আগে থেকে সমাবেশের অনুমতি চায়নি বিএনপি। ওই দিন সমাবেশ করার অনুমতি পাওয়া যাবে না বলেই ধারণা করেছে দলটি। আবার একই দিন খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ পড়ায় অনেকটা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে দলটি। কৌশলে দু'দিন পিছিয়ে ৭ জানুয়ারি সোহওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চায় তারা। জানা গেছে, শেষ মুহূর্তে নয়াপল্টনে শর্তসাপেক্ষে সমাবেশের অনুমতি পেতেও পারে বিএনপি।
এদিকে ৭ জানুয়ারির সমাবেশের প্রস্তুতি নিতে আজ মতবিনিময় সভা করবে বিএনপি। বিকেল ৩টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত থাকবেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে তাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। দেশজুড়ে জেলা শহরে কালো ব্যাজ ধারণ ও কালো পতাকা মিছিলের পাশাপাশি ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের প্রস্তুতি চলছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, সমাবেশের অনুমতি মিলবে।
এদিকে গতকাল বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস। ২০১৪ সালের এই দিনে ভোটারহীন নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে করা হয়েছে পরাধীন। সরকারি দলের হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে জেলা ও মহানগরগুলোতে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি সাফল্যমণ্ডিত হবে। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখনও ঢাকায় ৭ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি পাওয়া যায়নি। সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন থাকবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপনাদের পরে অবহিত করা হবে।
বিএনপি সূত্র জানায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে হলে দুটি সংস্থার অনুমতির প্রয়োজন। এর মধ্যে গণপূর্ত অধিদপ্তর জানিয়েছে, পুলিশ অনুমতি দিলে তাদের আপত্তি নেই। তবে পুলিশ এখনও অনুমতি দেয়নি।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে আজ সারাদেশে আদালত অঙ্গনে কালো ব্যাজ ধারণ ও বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি পালন করবে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নির্বাচন বর্জন করে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি পালন করে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল নির্বাচনে অংশ নেয়। নির্বাচনে ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যরা। বাকি আসনগুলোতেও বিপুল ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।
২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তির দিবসটিতে দেশজুড়ে লাগাতার অবরোধ ও হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এরপর তিনি গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ৯২ দিনের মাথায় তিনি আদালতে হাজিরা দেওয়ার জন্য কার্যালয় থেকে বের হন। ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দল সমাবেশের অনুমতি চাইলে তা বাতিল করা হয়। পরে বিএনপি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে। আর আওয়ামী লীগ সমাবেশে করে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে।
(সংগৃহীত)
দিবসটি উপলক্ষে গত বছরের ৫ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চাইলেও এবার আগে থেকে সমাবেশের অনুমতি চায়নি বিএনপি। ওই দিন সমাবেশ করার অনুমতি পাওয়া যাবে না বলেই ধারণা করেছে দলটি। আবার একই দিন খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ পড়ায় অনেকটা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে দলটি। কৌশলে দু'দিন পিছিয়ে ৭ জানুয়ারি সোহওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চায় তারা। জানা গেছে, শেষ মুহূর্তে নয়াপল্টনে শর্তসাপেক্ষে সমাবেশের অনুমতি পেতেও পারে বিএনপি।
এদিকে ৭ জানুয়ারির সমাবেশের প্রস্তুতি নিতে আজ মতবিনিময় সভা করবে বিএনপি। বিকেল ৩টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত থাকবেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে তাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। দেশজুড়ে জেলা শহরে কালো ব্যাজ ধারণ ও কালো পতাকা মিছিলের পাশাপাশি ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের প্রস্তুতি চলছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, সমাবেশের অনুমতি মিলবে।
এদিকে গতকাল বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস। ২০১৪ সালের এই দিনে ভোটারহীন নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে করা হয়েছে পরাধীন। সরকারি দলের হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে জেলা ও মহানগরগুলোতে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি সাফল্যমণ্ডিত হবে। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখনও ঢাকায় ৭ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি পাওয়া যায়নি। সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন থাকবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপনাদের পরে অবহিত করা হবে।
বিএনপি সূত্র জানায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে হলে দুটি সংস্থার অনুমতির প্রয়োজন। এর মধ্যে গণপূর্ত অধিদপ্তর জানিয়েছে, পুলিশ অনুমতি দিলে তাদের আপত্তি নেই। তবে পুলিশ এখনও অনুমতি দেয়নি।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে আজ সারাদেশে আদালত অঙ্গনে কালো ব্যাজ ধারণ ও বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি পালন করবে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নির্বাচন বর্জন করে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি পালন করে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল নির্বাচনে অংশ নেয়। নির্বাচনে ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যরা। বাকি আসনগুলোতেও বিপুল ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।
২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তির দিবসটিতে দেশজুড়ে লাগাতার অবরোধ ও হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এরপর তিনি গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ৯২ দিনের মাথায় তিনি আদালতে হাজিরা দেওয়ার জন্য কার্যালয় থেকে বের হন। ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দল সমাবেশের অনুমতি চাইলে তা বাতিল করা হয়। পরে বিএনপি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে। আর আওয়ামী লীগ সমাবেশে করে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে।
(সংগৃহীত)
Today's Politics are far away to give us peace. We are common people, and everyday is very important to us for survive. The world is going to a hard and costly position and it is very heard to take some peace environment from here. Let's make a friendly political mood among each and every political organizations.